চোখ… দেহের অতি মূল্যবান একটু অঙ্গ। এই চোখ দিয়েই আমরা পৃথিবী দেখি, নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি পৃথিবীর বন্ধুর পথে। কিন্তু চোখের পর্যাপ্ত যত্ন করি কি? ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অনিয়মতান্ত্রিক ওষুধ ব্যবহার চোখের অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। কীভাবে সতর্ক হবেন?
- প্রথমত রোগীকে জানতে হবে তার চোখের কোনো ড্রপে এলার্জি আছে কিনা? পূর্বে এলার্জির ইতিহাস থেকে সেই ড্রপের নাম ডাক্তারকে চিকিৎসা নেয়ার আগেই জানানো প্রয়োজন।
- শরীরে চোখের রোগ ছাড়া অন্য কোনো রোগ আছে কিনা (যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, হাঁপানি, বাতরোগ, ইত্যাদি) তা ডাক্তারকে জানানো প্রয়োজন।
- চোখে চুলকানি বা এলার্জির চিকিৎসা হিসেবে কখনও ডাক্তার স্বল্প সময়ের জন্য স্টেরয়েড আইড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেন এবং রোগী আরামবোধ করেন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া রোগীরা এ ড্রপ মাসের পর মাস ব্যবহারের ফলে, চোখে ছানিরোগ এবং চাপ বেড়ে গিয়ে (গ্লুকোমা) চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
- বাংলাদেশে বর্তমানে অনিয়ন্ত্রিত স্টেরয়েড ব্যবহারজনিত অন্ধত্বের হার দিন দিন বাড়ছে।
- চোখে সমস্যা হলেই ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ কিনে চোখে ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। এতে চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং ঘনঘন চোখে ইনফেকশন হতে পারে যা পরে ওষুধ প্রয়োগেও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।
- যারা গ্লুকোমা রোগের জন্য চোখের ড্রপ ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা মেনে চলা আবশ্যক। বিটাব্লকার জাতীয় চোখের ড্রপ যেমন টিমোলোল মেলিয়েট, হাঁপানি রোগীর শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয় এবং হৃদরোগীদেরও মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- এই ক্ষেত্রে হাঁপানি, হৃদরোগীদের গ্লুকোমা রোগের চিকিৎসায় অন্য গ্র“পের ওষুধ ব্যবহার প্রয়োজন। এছাড়াও ওষুধ প্রয়োগের পর নেত্রনালিতে কিছুক্ষণ চাপ দিয়ে রাখলে ওষুধের পার্শ^প্রতিক্রিয়া অনেকাংশে কম হয়।
- যাদের এঙ্গেলক্লোজার গ্লুকোমা রয়েছে, কোনো কারণে তাদের চোখে যদি হোমাট্রপিন বা এট্রপিন জাতীয় ওষুধ দেয়া হয়, সে ক্ষেত্রে চোখে প্রচণ্ড ব্যথা হয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে।
- যাদের চোখের ভেতর প্রদাহ বা ইউভাইটিস রয়েছে, সে ক্ষেত্রে পাইলোকারপিন এবং ল্যাটানোপ্রস্ট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যায় না। এতে চোখের প্রদাহ বেড়ে যায়।
- আঘাতের কারণে অথবা অন্য যে কোনো কারণে যদি কর্নিয়াতে ঘা হয়, সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েড ড্রপ ব্যবহার করলে কর্নিয়া ঘা বেড়ে গিয়ে কর্নিয়া ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। এতে চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া শুষ্ক চোখ, কর্নিয়ার এব্রাশান, ভিটামিন এ-এর অভাবজনিত রোগে স্টেরয়েড ব্যবহার করা ঠিক নয়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন